MICR-রিডার, ওএমআর, ওসিআর ও বারকোড রিডার
MICR-রিডার
MICR এর পূর্ণরূপ হল Magnetic Ink Character Recognition. যে মেশিন MICR লেখা পড়তে পারে তাকে MICR-রিডার বলে। চৌম্বক কালির সাহায্যে MICR লেখা হয়। এই পদ্ধতিতে ব্যাংকের চেক নাম্বার লেখা ও পড়া হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল ব্যাংকে MICR যুক্ত চেক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ওএমআর
OMR বা Optical Mark Reader এমন এক যন্ত্র যা পেন্সিল বা কালির দাগ বুঝতে পারে। পেন্সিলের দাগ বোঝা যায় পেন্সিলের সীসার উপাদান গ্রাফাইটের বিদ্যুৎ পরিবাহিতা যাচাই করে। কালির দাগ বোঝা যায় কালির দাগের আলোর প্রতিফলন বিচার করে। অবজেকটিভ প্রশ্নের উত্তরপত্র পরীক্ষা, বাজার সমীক্ষা, জনগণনা ইত্যাদি কাজে OMR ব্যবহৃত হয়।
ওসিআর
OCR বা Optical Character Reader শুধু দাগই বোঝেনা, বিভিন্ন বর্ণের পার্থক্যও বুঝতে পারে। চিঠির পিন কোড, ইলেকট্রিক বিল, ইনস্যুরেন্স প্রিমিয়াম, নোটিস ইত্যাদি পড়ার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।
OMR ও OCR এর মধ্যে পার্থক্য কি?
ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রেকগনিশন) এবং ওসিআর (অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রেকগনিশন) কাগজ থেকে ডিজিটাল ফরম্যাটে তথ্য পাওয়ার দুটি পদ্ধতি। উভয় অনুরূপ উপায়ে কাজ বলে মনে হয় যদিও, OMR এবং OCR মধ্যে একটি প্রধান পার্থক্য আছে। ওএমআরআর এর দায়িত্ব শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট পূর্বাভাসযুক্ত এলাকার একটি মার্ক উপস্থিত বা না তা বলার জন্য। ওসিআর এছাড়াও চিহ্ন উপস্থিতি সনাক্ত করে কিন্তু এর টাস্ক সেখানে থামতে না। ওকে অবশ্যই কি চিহ্নটি চিহ্নিত করতে হবে। এটি সম্ভাব্য অক্ষর সীমাবদ্ধ এবং সঠিকতা বৃদ্ধি করার জন্য সাধারণত একটি একক ভাষাতে সীমাবদ্ধ।
ওসিআর এর প্রাথমিক উদ্দেশ্যটি ইতিমধ্যেই মুদ্রিত একটি ডকুমেন্টকে পুনঃ-এনকোড করার প্রয়োজনকে অতিক্রম করতে হয়। ওসিআর একটি মুদ্রিত ডকুমেন্টের একটি ছবি নেয়, একটি পৃষ্ঠার সমস্ত অক্ষরগুলি সনাক্ত করার চেষ্টা করে, তারপর একটি সম্পাদনাযোগ্য ডকুমেন্টের মধ্যে অক্ষরগুলিকে স্ট্রিং করে যেটি পরে একটি শব্দ প্রসেসরে সম্পাদনা করা যায় এবং মূলত মূল নথির মতামত। যদিও 100% নির্ভুল নয়, এটি উল্লেখযোগ্যভাবে নথিটি পুনরায় তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা হ্রাস করে। তুলনামূলকভাবে, OMR- এর প্রধান ব্যবহারগুলি বড় সংখ্যক নথি থেকে ডাটা বা ট্যাবলেটে মূল্যায়ন করা হয়। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে সহজ একাধিক পছন্দের পরীক্ষায় গ্রেডিং। একই পদ্ধতি ব্যবহার করে আদমশুমারি বা সার্ভেগুলি থেকে ডাটা ডিলিট করতে OMR ব্যবহার করা হয়। ওমর দ্রুত হাতে তুলনায় তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হয় যেহেতু মেশিন তাত্ক্ষণিকভাবে একটি শীট প্রক্রিয়া করতে পারে।
যখন হার্ডওয়্যার আসে, OMR তুলনায় অনেক সহজ। ওএমআরআরতে, পূর্বনির্ধারিত স্পেসগুলিতে একটি আলো আলোকিত হয়। যদি একটি চিহ্ন উপস্থিত হয়, কাগজ ছিল না তুলনায় কম প্রতিফলিত আলো আছে কেউ না। ওসিআর সঙ্গে, এটা যে সহজ নয়। পৃষ্ঠার চিত্রটি সাধারণত একটি চিত্রের মধ্যে স্ক্যান করা হয়। পৃষ্ঠায় ব্যক্তি চিহ্ন তারপর আলাদাভাবে মূল্যায়ন করা হয় এবং পরিচিত অক্ষর আকৃতির তুলনায়। এটি অর্জন করা খুব সহজ নয় এবং হার্ডওয়্যারে বাস্তবায়ন করা বেশ ব্যয়বহুল। এজন্যই বেশিরভাগ ওসিআর সিস্টেম কম্পিউটার ব্যবহার করে উপযুক্ত সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে। OMR সিস্টেম অপারেটিং সিস্টেম হার্ডওয়্যার বাস্তবায়নে সহজ, এবং তারা বেশ প্রচলিত; লটারিতে ব্যবহৃত মেশিনগুলির মতো।
- OMR কালির দাগ বুঝতে পারে আর OCR বর্ণ সংখ্যা বুঝতে পারে।
- OMR অবজেক্টিভ প্রশ্নের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় OCR ব্যাংক, চিঠির পিন এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
- OMR এর ব্যবহার তুলানামুলক সহজ কিন্তু OCR এর ব্যবহার কিছুটা জটিল।
স্ক্যানার ও OMR এর মধ্যে পার্থক্য কি?
- স্ক্যানার কম্পিউটারের একটি ইনপুট ডিভাইস, যার মাধ্যমে ছবি বা বই স্ক্যান করে কম্পিউটারে সঞ্চয় করা হয়।
- OMR কম্পিউটারের একটি ইনপুট ডিভাইস, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু ফরম্যাট থেকে ডাটা সংগ্রহ করা হয়।
বারকোড রিডার
বারকোড রিডার একটি অপটিক্যাল ইনপুট ডিভাইস। বারকোড বলতে কমবেশি চওড়াবিশিষ্ট পর্যায়ক্রমে কতগুলো বার বা রেখার সমাহারকে বোঝায়। একে ইউনিভার্সাল প্রোডাক্ট কোডও বলা হয়। দোকান থেকে বিক্রিত জিনিসের প্যাকেটের উপর বারকোডের সাহায্যে জিনিসের নাম, মূল্য ইত্যাদি লেখা থাকে। অতঃপর একটি কম্পিউটার বারকোড রিডারের সাহায্যে কোডটি পড়ে তা কোন সংখ্যা বোঝায়, তা জেনে নিতে পারে। কম্পিউটারের স্মৃতিতে প্রতিটি জিনিসের বারকোড নাম্বার ও দাম রক্ষিত থাকে। এ থেকে কম্পিউটার বিক্রিত জিনিসের নাম ও দাম রক্ষিত থাকে। এ থেকে কম্পিউটার বিক্রিত জিনিসের নাম ও দাম লিখে বিল তৈরি করে এবং সাথে সাথে বিক্রিত জিনিসের স্টক আপডেট করে।
মাইক্রোফোন, জয়স্টিক, গ্রাফিক্স ট্যাবলেট, ওয়েবক্যাম ও ডিজিটাল ক্যামেরা
মাইক্রোফোন
মাইক্রোফোন একটি ইনপুট ডিভাইস যা শব্দ রেকর্ডিং এর জন্য ব্যবহার করা হয়। মাইক্রোফোনের মাধ্যমে শব্দ রেকর্ড হয় এবং ডিজিটাল ফরমেটে রুপান্তরের পর সাউন্ড ফাইল হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়।
জয়স্টিক
জয়স্টিক হল একটি ইনপুট ডিভাইস যতে আয়তাকার বেসের উপর একটি দন্ড বসানো থাকে। বেসের সাথে কম্পিউটারের সংযোগ থাকে। সাধারণত কম্পিউটারে গেম খেলতে জয়স্টিক ব্যবহৃত হয়। এছাড়া ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও বিভিন্ন ধরণের সিমুলেশনের কাজেও জয়স্টিক ব্যবহৃত হয়।
গ্রাফিক্স ট্যাবলেট
গ্রাফিক্স ট্যাবলেট কার্যত মাউসের বিকল্প যন্ত্র। গ্রাফিক্স ট্যাবলেট দেখতে অনেকটা পেন্সিলের স্লেটের মতো। বিশেষ কলম দিয়ে স্লেট বা প্যাডের উপরে ছবি বা কোন অলঙ্করণের কাজ করা যায়।
ওয়েবক্যাম
ওয়েবক্যাম হল একটি ভিডিও ক্যামেরা যা কম্পিউটার থেকে কম্পিউটারে রিয়েল টাইম ইমেজ বা ভিডিও আদানপ্রদান করে। এর মাধ্যমে ইন্টারনেটে ভিডিও চ্যাটিং করা যায়, কম্পিউটার থেকে ভিডিও দেখে নিরাপত্তার কাজ করা যায় এবং ভিডিও রেকর্ডিং করা যায়।
ডিজিটাল ক্যামেরা
চলন্ত এবং স্থির ছবি তুলে তা কম্পিউটারে দেওয়ার জন্য ডিজিটাল ক্যামেরা ব্যবহৃত হয়। ডিজিটাল ক্যামেরাতে ফিল্ম থাকেনা। এতে CCD(Charge Coupled Device) নামক একটি চিপ থাকে।
ইউএসবি ফ্লাশ ড্রাইভ বা পেনড্রাইভ ,ফ্লপি ডিস্ক , সিডি
ইউএসবি ফ্লাশ ড্রাইভ বা বা পেনড্রাইভ ফ্লাশ ডাটা স্টোরেজ ডিভাইস এবং ইউএসবি (ইউনিভারসাল সিরিয়াল বাস) ইন্টারফেস এর সমন্বয়ে গঠিত। ইউএসবি ফ্লাশ ড্রাইভ সাধারণত সিস্টেম থেকে বিচ্ছিন্নকরণযোগ্য এবং এতে পুনরায় ডাটা লিখা যায়। এটি বাহ্যিকভাবে ফ্লপি ডিস্ক বা অপটিক্যাল ডিস্ক থেকে অনেক ছোট । অধিকাংশ ইউএসবি ফ্লাশ ড্রাইভের ওজন ৩০ গ্রাম এর চেয়ে কম । আকার ও খরচ ঠিক রেখে ২০১৩ সালে ৫১২ গিগাবাইট ধারণক্ষমতা পর্যন্ত ইউ এস বি ফ্লাশ ড্রাইভ তৈরী করা সম্ভব হয়েছে । ২০১৩ সালের কনজিউমার ইলেক্ট্রনিক শো’তে ১ টেরাবাইট ধারণক্ষমতার ফ্লাশ ড্রাইভ দেখানো হয়েছে এবং পরে সে বছরেই তা বাজারে আসে। কিছু ইউএসবি ফ্লাশ ড্রাইভে ১০,০০,০০০ বার তথ্য লেখা/মোছা যায় এবং মেমোরি চিপের ধরনের উপর ভিত্তি করে ১০ বছর পর্যন্ত দোকানে বিক্রয়ের জন্য রাখা যেতে পারে।
ফ্লপি ডিস্ক হচ্ছে পরিবহনযোগ্য হার্ড ডিস্কের চেয়ে ছোট এক প্রকার স্মৃতি যা ডিস্ক যা হার্ডডিস্কের মত ডাটা জমা রাখতে বা দিতে পারে তবে এটি প্রয়োজন মত কম্পিউটারে সংযুক্ত করা বা বের করা যায় ।ফ্লপি ডিস্ক যে কারণে ব্যবহার করা হত ইউএসবি ফ্লাশ ড্রাইভও একই কারণে ব্যবহার করা হয় ।কিন্তু ইউএসবি ফ্লাশ ড্রাইভ আকারে ছোট, অনেক দ্রুত, হাজার গুণ বেশি ধারণক্ষমতা এবং চলমান পার্টস না থাকায় অনেক বেশি টেকসই এবং নির্ভরযোগ্য। সেইসঙ্গে এগুলোতে ফ্লপি ডিস্কের মত বিদ্যুতচৌম্বকীয় বিঘ্নতা ঘটে না এবং অপটিক্যাল ডিস্কের মত দাগ পড়ার ভয় নেই।
কমপ্যাক্ট ডিস্ক (Compact Disc) ইংরেজি শব্দ।তবে এটি CD নামে বহুল পরিচিত । তথ্য ধারণের একটি অপটিক্যাল স্টোরেজ ডিভাইস দেখতে চাকতি বিশেষ,যা ডিজিটাল তথ্য যেমন- লেখা , ছবি, ভিডিও, গান প্রভৃতি রাখার একটি প্রযুক্তি। গোলাকৃতির ও কয়েক মিলিমিটার পুরু চাঁচ নির্মিত এই ডিস্ক কম্পিউটারের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে। আদর্শ সিডিগুলোর ব্যাস প্রায় ১২০ মি.মি. বা ৪.৭ ইঞ্চি হয়ে থাকে এবং এতে প্রায় ৭০০ মেগাবাইট (৭০০×২^২০ বাইট) তথ্য সংরক্ষণ করা যায়। এটি প্রি-রেকর্ডেড, রেকর্ডেবল, এবং রিরাইটেবল তিন ধরনের হয়ে থাকে। এর থেকে তথ্য লিখা বা পড়ার জন্য একটি অপটিক্যাল ডিভাইস বা ড্রাইভ বা চালক প্রয়োজন হয় । একে CD ROM বলে ।